Type Here to Get Search Results !

দুই জান্নাতকেই ‘চুক্তিভিত্তিক’ বিয়ে করেন মামুনুল হক।


দুই জান্নাতকেই ‘চুক্তিভিত্তিক’ বিয়ে করেন মামুনুল হক

দুই জান্নাতকেই ‘চুক্তিভিত্তিক’ বিয়ে করেন মামুনুল

হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হককে সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। ডিবি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনের মুখ খুলতে শুরু করেছেন মামুনুল হক।প্রথম বিয়ে পর দুই জান্নাতকেই কন্ট্রাকচ্যুয়াল (চুক্তিভিত্তিক) বিয়ে করেছিলেন মামুনুল। এসব বিয়ের সময় কারা সাক্ষী ছিলেন তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম এই তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন। 

অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা দিতেই দুই ডিভোর্সি নারীকে বিয়ে করেছিলেন বলে তদন্তসংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি করেন মামুনুল। বলেছেন, রিসোর্টকাণ্ডে শুরুতেই স্বীকার করলে প্রথম স্ত্রী আমেনা তৈয়বা বড় ধরনের কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতেন বলে তার ধারণা ছিল। এ কারণে তৎক্ষণাৎ স্বীকার করেননি। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনই অন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্যের সঙ্গে এসব কথা বলেছেন মামুনুল। 

একই সঙ্গে রিমান্ডে তাকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়েও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে। 

সোমবার আদালতের নির্দেশে মামুনুল হককে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, মামুনুলকে নিরাপত্তার স্বার্থেই কেবল গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে আমার অফিসাররা গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। মঙ্গলবার (আজ) আমি নিজেই জিজ্ঞাসাবাদে থাকব । 

দুই জান্নাতকেই ‘চুক্তিভিত্তিক’ বিয়ে করেন মামুনুল হক

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত মামুনুল প্রথম বিয়ে ছাড়া বাকি দুই বিয়ের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এমনকি বিয়ের স্বাক্ষীদের নাম প্রকাশের ব্যাপারেও গড়িমসি করছেন। দ্বিতীয় জান্নাতের ভাই শাহজাহানের জিডি নিয়ে আমরা কাজ করছি। 

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, 'যে দুই নারীর নাম বেরিয়ে আসছে, তাদের সঙ্গে মামুনুল হক দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বসবাস করে আসছেন। একইসঙ্গে তার স্ত্রী দাবিকারী এক জান্নাতের নিকটাত্মীয়ের করা জিডির সূত্র ধরে তার কাছে জানতে চাইলে মামুনুল এ সময় মুখ বুজে থাকেন। কোনো উত্তর দেননি। পাশাপাশি ওই দুই নারী ডিভোর্সি হওয়ায় তাদের দিকে মানবিকভাবে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বলেও জানিয়েছেন মামুনুল হক। এরমধ্যে একজনকে মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসায় চাকরিও দিয়েছেন।' 

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'কাগজপত্র না থাকলে কিভাবে বিয়ে হলো? এমন প্রশ্নে গোয়েন্দাদের মামুনুল হক জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন বসবাস করলেও বিয়ের কাবিন করেননি। আর এ কারণেই কোনো কাবিননামাও নেই। তাদের দিকে মানবিক দৃষ্টি দিয়েছিলেন তিনি। ওই নারীদের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনাই ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। সেভাবেই তাদের সাপোর্ট করে আসছিলেন তিনি।' 

মাহবুব আলম বলেন, 'ইসলাম তো দাঙ্গা, সংঘাত, সহিংসতা ও নাশকতার কথা বলেনি, তাহলে কেন হেফাজতে ইসলাম এগুলো করছে? এমন প্রশ্নে মামুনুল হক বলেন, 'সংগঠনের নেতা হিসেবে আমার ওপর দায় আসে। হেফাজত ছাড়া অন্য কোনো সংগঠনও সংঘাতে জড়ায়। আমাদের বেলায় তেমনটি হতে পারে।' তবে, তিনি এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত কি না, সে বিষয়ে মুখ খোলেননি।' 

দুই জান্নাতকেই ‘চুক্তিভিত্তিক’ বিয়ে করেন মামুনুল

'২০১৩ সালে হেফাজত ইসলাম তাণ্ডব চালিয়ে পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ছাড়াও জানমালের ক্ষতি করে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। একইসঙ্গে তাকে হেফাজতে ইসলামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে, মোহাম্মদপুর থানার মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, যখন তাবলিগ জামাতের দুটি গ্রুপ সাদ ও জুবায়ের পন্থী মারামারি হয়েছিল, তিনি সেদিন জুবায়েরপন্থী ছিলেন। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত হয়েছিল কি না তা তার জানা নেই বলে দাবি করেন মামুনুল হক। 

উল্লেখ‌্য, রোববার (১৮ এপিল) দুপুরে মোহাম্মদপুর রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই তার বিরুদ্ধে একে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। মোহাম্মদপুর থানার মারামারি মামলায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে মিন্টু রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.